• রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
অনলাইন নিউজপোর্টাল তারুণ্যের কণ্ঠ.কম সারাদেশে  জেলা/উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেবে। প্রার্থীকে অবশ্যই পরিশ্রমী, সৎ, উদ্যমী ও মেধাবী  হতে হবে।  জীবনবৃত্তান্ত ই-মেইলে পাঠাতে হবে। newstarunkantho@gmail.com  

সিংগাইরে বিএডিসি অফিস যেন ‘ভূতুড়ে বাড়ি’, সেবাবঞ্চিত কৃষকদের ভোগান্তি চরমে

তারুণ্যের কণ্ঠ
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্র সেচ) কার্যালয়টি দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন কোনো পরিত্যক্ত ডুপ্লেক্স বাড়ি। সদর দরজা থেকে শুরু করে পুরো চত্বর জঙ্গলে ছেয়ে গেছে, সব সময় ঝুলছে তালা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুপস্থিতিতে সরকারি এই গুরুত্বপূর্ণ অফিসটি কার্যত ‘ভূতুড়ে বাড়িতে’ পরিণত হয়েছে। ফলে সেচসহ নানা জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। কৃষিপ্রধান দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের এমন দশায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ ভুক্তভোগীরা।

সিংগাইর উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়নের কাংশা গ্রামের কৃষক মো. বাবুল হোসেন জানান, ধান চাষ প্রকল্পের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগের ছাড়পত্র নিতে গত তিন মাস ধরে তিনি এই অফিসে ধরনা দিচ্ছেন। কিন্তু কাউকে না পেয়ে বা ফোনেও সাড়া না পেয়ে তিনি হয়রানির শিকার।

আরেক ভুক্তভোগী মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, আঙ্গারিয়া মহল্লার সমবায় সমিতির গভীর নলকূপের ড্রেন সংস্কারের আবেদন উপজেলা প্রশাসন থেকে তদন্তের জন্য এখানে পাঠানো হলেও কোন ধরে কোনো সাড়া মেলেনি। বারবার এসেও কাউকে না পেয়ে তিনি হতাশ।

অফিস সংলগ্ন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার জানান, প্রতিদিন বহু কৃষক কাজের জন্য এসে তালাবদ্ধ অফিস দেখে ফিরে যান। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেখা পাওয়া যায় না বললেই চলে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়েও অভিযোগের সত্যতা মেলে। জঙ্গলপূর্ণ চত্বর ও তালাবদ্ধ ফটকই যেন অফিসের নিয়মিত চিত্র। আশপাশের ব্যবসায়ীরাও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই অফিসের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ে না।

জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিএডিসি সিংগাইর উপজেলায় উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের জন্য এই আধুনিক দ্বিতল ভবনটি নির্মাণ করে। প্রথমদিকে কর্মকর্তা থাকলেও এখন তা জনশূন্য, পরিচর্যার অভাবে জঙ্গলাকীর্ণ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী রতন কুমার সরকার ফোনে জানান, তিনি সিংগাইর ছাড়াও মানিকগঞ্জ সদর ও সাটুরিয়া—এই তিনটি উপজেলার দায়িত্বে রয়েছেন। তা সত্ত্বেও সপ্তাহে দুই-তিন দিন সিংগাইর অফিসে আসেন বলে তিনি দাবি করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে বিএডিসি’র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে। অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা তিন মাস অন্তর সেচ কমিটির সভা করেন এবং আমার জানামতে তিনি অফিসও করেন।’

তবে ভুক্তভোগী কৃষক ও স্থানীয়দের অভিজ্ঞতা প্রকৌশলী ও ইউএনও’র বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক। দ্রুত এই অচলাবস্থা নিরসন করে কৃষকদের জন্য কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।


More News Of This Category