কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৯ জন বাংলাদেশী নাগরিককে পুশ-ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ভাগজত ঘাট এলাকায় তাদের হেফাজতে নেয় ৪৭ ব্যাটালিয়ন বিজিবি। পুশ-ইন করা বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে রয়েছে ৪ জন পুরুষ, ২ জন নারী, ২ জন কিশোর এবং ১ জন শিশু।
শনিবার বিকেল ৫ টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড।
বিজিবি সূত্র জানান, ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীনস্থ আশ্রায়ন বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ১৫৪ হতে আনুমানিক ৩ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভাগজত ঘাট এলাকায় একটি নৌকা থেকে ৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নামতে দেখে স্থানীয় জনগণের সন্দেহ হলে তারা বিষয়টি আশ্রায়ণ বিওপিকে অবহিত করে। খবর পেয়ে বিজিবির টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ৯ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জিজ্ঞাসাবাদ তারা বলেন, তারা দুটি পৃথক পরিবার এবং প্রায় ৪ (চার) বছর আগে কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার বামনহাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে। তারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের দিল্লি রাজ্যের অন্তর্গত উত্তর-পশ্চিম দিল্লি জেলার রামপুরা থানার অধীনস্থ একটি এলাকায় ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
তারা আরও জানায়, সম্প্রতি ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ধরপাকড়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এবং আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো হয়রানি না করার সরকারি ঘোষণায় উৎসাহিত হয়ে নিজেরাই স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার অভিপ্রায় প্রকাশ করে।
পরবর্তীতে গতকাল শুক্রবার তাদেরকে ভারতের জলঙ্গি থানার নিকটবর্তী একটি বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে থেকে বিএসএফ কর্তৃক কাঁটাতারবিহীন চরাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়। বাংলাদেশে প্রবেশের পর তারা পায়ে হেঁটে ও ভাড়াকৃত মোটরসাইকেলে চলাচল করে ভাগজত ঘাট এলাকায় এসে উপস্থিত হয়।
বিএসএফ কর্তৃক পুশ-ইন করা ৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক বর্তমানে বিজিবির হেফাজতে রয়েছে এবং তারা শারীরিকভাবে সুস্থ আছে বলে জানান বিজিবি।
বিষয়টি বিজিবি কর্তৃপক্ষ ঘটনার পরপরই সংশ্লিষ্ট থানা ও বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে সকাল সাড়ে ১০ টার সময় সীমান্ত পিলার ৮৫/১০-এস এর নিকটবর্তী স্থানে বিজিবি চর-চিলমারী কোম্পানি ও প্রতিপক্ষ ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের জলঙ্গি কোম্পানি কমান্ডারের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবি পুশ-ইনের বিষয়ে প্রতিবাদ জানালে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে। তবে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হস্তান্তর নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেন।