কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বণ্টন নিশ্চিত করতে কওমী মাদ্রাসার আলেম-ওলামাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহবান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি রোববার ঢাকায় জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে কোরবানির পশুর চামড়া সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কওমী মাদ্রাসার আলেম-ওলামাগণের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া মূল্যবান জাতীয় সম্পদ। এটি সঠিকভাবে সংগ্রহ করে ট্যানারি শিল্পে সরবরাহের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখা সম্ভব। প্রতি বছর কোরবানির সময় বিপুল পরিমাণ পশুর চামড়া সংগ্রহ হলেও অব্যবস্থাপনা ও অসচেতনতার কারণে এর একটি বড় অংশ নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য ধর্মীয় নেতা, স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিতভাবে কাজ করা প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, আলেম-ওলামাগণ সমাজে প্রভাব রাখেন, তাই তাদের সহযোগিতায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে চামড়া নষ্ট হওয়া রোধ করা যাবে। সরকার এবছর এ সমস্যা সমাধানে ধর্মীয় নেতাদের সম্পৃক্ত করতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে।
শেখ বশিরউদ্দীন আরো বলেন, চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশ সফর করছেন। তাদের সাথে আমরা কাঁচা চামড়া বা ব্লু ওয়েট নিয়ে কথা বলেছি। ইতোমধ্যে আমরা চামড়া রফতানি নিষিদ্ধকরণের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছি; যাতে কাঁচা চামড়া রফতানি সম্ভব হয়। তিনি বলেন, আমি চাইনা এদেশ থেকে কাঁচা চামড়া বাইরে রফতানি হোক, কিন্তু সঠিক দাম না পেলে আমাদের সেদিকে যেতে হবে। পৃথিবীর মোট চামড়ার সাড়ে তিন শতাংশ চামড়া বাংলাদেশ থেকে সরবরাহ করা সম্ভব।
উপদেষ্টা বলেন, যখন ২৫ হাজার টাকা গরুর দাম ছিল তখন চামড়ার দাম ছিল ২ হাজার টাকা; এখন গরুর দাম ১ লাখ টাকা কিন্তু চামড়ার দাম ২০০ টাকা; এটা একদম অস্বাভাবিক অবস্থা। দাম নিশ্চিত করার জন্য চামড়া সঠিক প্রক্রিয়ায় পরিচ্ছন্ন করতে হবে এবং লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। লবণ চাষীদের কাছ থেকে ইতোমধ্যে সাড়ে সাত লাখ মন লবণ সংগ্রহ করা হয়েছে। চামড়া সংরক্ষণের জন্য এই লবণ মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। এতে লবণ চাষিরা কিছুটা হলেও উপকৃত হবে।
জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: শামীম হুসাইন, খিলগাঁও মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা জহুরুল ইসলাম , দক্ষিণগাঁও সবুজবাগ মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা সাব্বির আহমেদ, মুফতি জাবের কাসেমী, মুফতি আব্দুল মালেক প্রমুখ এ সভায় বক্তব্য রাখেন।