মো. কামরুল হোসেন সুমন, ভোলা:
কোরআন বিরোধী নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলসহ ৪ দফা দাবীতে ভোলায় হেফাজতের বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) আছর নামাজ শেষে শহরের খলিফাপট্টি ফেরদাউস জামে মসজিদের চত্ত্বর থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নতুন বাজারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় সংক্ষিপ্তভাবে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম ভোলা জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আনাস, সহ-সভাপতি মাওলানা নুরুল্লাহ, শফি উদ্দিন, সিনিয়র সহকারী সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মিজানুর রহমান প্রমূখ। এ সময় হেফাজতে ইসলাম ভোলা জেলা শাখা, উপজেলা শাখা এবং ভোলার অন্যান্য উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দসহ শত শত নেতা-কর্মী ও তৌহিদী জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় নেতৃবৃন্দ ৪ দফা দাবী তুলে ধরেন। দাবীগুলো হচ্ছে- ১। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোরআন বিরোধী প্রতিবেদন ও কমিশন বাতিল। ২। সংবিধানে বহুত্ববাদের পরিবর্তে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস পূর্ণ বহাল। ৩। ফ্যাসিবাদের আমলে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শাপলা চত্বরসহ সকল গণহত্যার বিচার। ৪। ফিলিস্তিন এবং ভারতে মুসলমানদের নিপীড়ন বন্ধ।
এছাড়া উল্লেখিত ৪ দাবি নিয়ে আগামী ৩ মে দেশের রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশর ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। উক্ত সমাবেশ সফল করার লক্ষে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল কর্মসূচি পালিত হয়।
জেলা নেতৃবৃন্দ বলেন, হেফাজত যে কোন সময় ইসলাম বিরোধীদের মোকাবেলায় রাজ পথে কর্মসূচি পালন করে আসছে। ইসলাম ও মানবতা বিরোধীরাই আমাদের মূল শত্রু। যারা এদেশে পতিতালয়ের নারীদেরকে শ্রমিক হিসেবে মর্যাদা দিতে চায় তারা দেশের সুনাগরিক হতে পারে না। নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন, সংস্কারের নামে এখানে নারীদেরকে চরমভাবে অপমানিত করেছে। পাশাপাশি কুরআনের একাধিক আয়াতের সাথে সরাসরি দ্বিমত পোষণ করেছে। ৯২% মুসলমানের দেশে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ মনে করে যে সংস্কারের নামে এই কমিশন যেহেতু কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী আইন প্রণয়নের সুপারিশ করেছে, তাই এই কমিশন বাতিল করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যে সকল মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে সে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সংবিধানে আল্লাহর উপর আস্থা-বিশ্বাস বহাল রাখতে হবে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সবসময়ের জন্যই বহাল রাখতে হবে। ফিলিস্তিন এবং ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
আমরা বর্তমান সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, যেন তিনি ফিলিস্তিন এবং ভারতে মুসলিম গণহত্যা বিরুদ্ধে বিশ্ব মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ করে জোরালো প্রতিবাদ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে বিশেষ দোয়া মুনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচী শেষ হয়।